প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগণ, আজকে আমরা জানবো কিভাবে “বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য” অনুচ্ছেদ রচনাটি লিখতে হয় । যা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য হবে ।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনুচ্ছেদঃ
মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর অপার মহিমায় অপরূপ সৌন্দর্য প্রদান করেছেন বাংলাদেশের প্রকৃতিতে। বাংলাদেশের অফুরন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভাণ্ডারকে ভাষা দিয়ে পূর্ণ মাত্রায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ভাবের তনয়তা সহযোগে অবলোকন করলেই এর মাধুর্য মানুষের চোখে ধরা পড়বে। বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকগণ তাঁদের লেখনিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রচুর বর্ণনা প্রদান করেও তৃপ্ত হতে পারেননি কেননা যতদূর চোখ যায় ততদূরই কেবল লীলাময়ী প্রকৃতির লীলাখেলা। এ দেশের যে প্রান্তেই যাওয়া হোক না কেন প্রকৃতির নিবিড় আলিঙ্গন পাওয়া যাবে। এ মনোরম সৌন্দর্যের মূলে রয়েছে ঋতুবৈচিত্র্যের লীলা। ছ্যাটি ঋতুর আবর্তের মাঝে প্রকৃতির রূপ ও রঙের পরিবর্তন হয়। গ্রীস্মের দাবদাহে মাঠঘাট ফেটে চৌচির হয়। আকাশে উত্তর-পশ্চিমের প্রান্তটি দখল করে রাখে ঘন কালো মেঘ । সহসা ঝড়ের প্রণয় নৃত্য শুরু হয়। বর্ষার আগমনে প্রকৃতি হয়ে যায় শান্ত। রিক্ত মাঠঘাট বৃষ্টির পানিতে হয়ে ওঠে সিক। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের বাহারি চমক প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলে। শরতের কাশফুল ও আকাশের সাদা মেঘের ভেলা প্রকৃতিকে শুভ্রতা দান করে হেমন্তের সোনালি ধান ও নবান্নের উৎসবে চারদিক মুখরিত হয়ে ওঠে।
আরো পড়ুনঃ সকল অনুচ্ছেদ রচনার লিংক।
কুয়াশা চাদরে আবৃত রুক্ষ শীত প্রকৃতিকে যেন নিঃস্ব ও রিক করে তোলে। আবার ভোরের শিশিরের ওপর ঝলমলে রোদ পড়লে প্রকৃতি যেন নতুন অলংকার সজ্জিত হয় । বসন্তের আগমনে বাংলার প্রকৃতি যেন নতুন বধূর সাজ নিয়ে বাসরসজ্জা রচনা করে। আমের মুকুলের গন্ধ দখিনা সমীরণে ভর করে মানুষের মনকে আমোদিত করে তোলে। কোকিল তার কণ্ঠে যেন নতুন করে স্বর ফিরে পায়। বনে বনে ফুল ও পাখিদের মাঝে পুনর্মিলনী উৎসব পালিত হয়। আমাদের দেশের নদ-নদী, পাহাড়-ঝরনা ও সমুদ্র সৈকতের মাঝে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের চিরস্থায়ী রূপ। কুয়াকাটা ও করাবাজারের সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য যে কারও মনকে আকৃষ্ট করবে। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ব সীমানায় দাড়িয়ে আছে ছোট বড় অসংখ্য পাহাড়। পাহাড়ের চাল বেয়ে নেমে এসেছে চপলা ঝরনা। দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে কুল কুল সুর তুলে বরো চলেছে কর্ণফুলি নদী। হিমছড়ির পাহাড়ী ঝরনা যেন চটুল মেয়ের নৃত্যের ছন্দ। এসব সৌন্দর্য উপভোগের জন্যে বিদেশিনের সমাগম ঘটে। তাই বলা যায়, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি এই সৌন্দর্য যেন বিনষ্ট না হয়, সেদিকে দায়িত্বশীল দৃষ্টি দিতে হবে।