বাংলাদেশের কুটির শিল্প অনুচ্ছেদ রচনা (৬, ৭, ৮, ৯, ১০ শ্রেণি)

Posted on
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকে আমরা জানবো “বাংলাদেশের কুটির শিল্প” অনুচ্ছেদ রচনাটি কিভাবে লিখতে হয় । যা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য হবে।
 
বাংলাদেশের কুটির শিল্প অনুচ্ছেদঃ
 
সামান্য মূলধনের মাধ্যমে ঘরে বসে ছোটখাটো যন্ত্রপাতির সাহায্যে অথবা হাতে নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করাই হলো কুটির শিল্প। সামর্থ্য অনুযায়ী এক এক ধরনের পণ্য, সমাজের এক এক শ্রেণির লোকে উৎপাদন করে থাকে। আর এটা হয় তাদের জীবিকা নির্বাহের নিজস্ব পেশা। গ্রামের দিকে লক্ষ করলেই কুটির শিল্পের বাস্তবরূপ আমরা দেখতে পারি । যেখানে রয়েছে তাঁতি, স্বর্ণকার, আমার, কুমার, ছুতার, চামার, শাখারি প্রভৃতি। বাংলাদেশের কুটির শিল্প এক সময়ে সারা বিশ্বে আদৃত ছিল। ঢাকাই মসলিন এখন ইতিহাসের কিংবদন্তীতে পরিণত হলেও এমন এক সময় ছিল যখন গ্রিস, রোম ও পারস্যের রাজকুমারী ও সম্রাজ্ঞীদের নিকট এগুলো ছিল সর্বাধিক আকাঙ্ক্ষিত বস্তু। কিন্তু ব্রিটিশরা ভারতবর্ষে ব্যবসায়-বাণিজ্যের নামে এ উপমহাদেশ গ্রাস করতে লাগল যে দিন থেকে তারা নিজেদের ব্যবসার ক্ষেত্র প্রশস্ত করতে লাগল সে দিন থেকেই আমাদের এই কুটির শিল্প ধ্বংসের মুখে পতিত হলো। ব্রিটিশগণ শাসন ক্ষমতা নিজেদের আয়ত্তে আনার পর অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এসব কুটির শিল্প পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল । 
 
 
শোনা যায় তারা কুটির শিল্পে নিয়োজিত দক্ষ কারিগরদের হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল কেটে ফেলেছিল। অতীতে বিদেশি বেনিয়ারা আমাদের কুটির শিল্প ধ্বংস করেছিল কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানের জয় যাত্রার কারণে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও কলকারখানা স্থাপিত হয়েছে, ফলে দিনে দিনে কুটির শিল্পের অবনতি হচ্ছে। কেননা কল-কারখানায় তৈরি জিনিসপত্র সাধারণত স্বল্পমূল্যের, টেকসই ও সহজলভ্য হয়ে থাকে। ফলে এগুলো খুব স্বাচ্ছন্দ্যে আমরা ব্যবহার করতে পারি। তাছাড়া বিদেশি মালামালের চাকচিক্যের মোহে পড়ে আমরা আমাদের ঘরে তৈরি জিনিসের কথা ভুলতে বসেছি। জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার কারণে এখন আর গৃহস্থালির কাজে মাটির জিনিসপত্র ব্যবহৃত হচ্ছে না। ফলে কুমারেরা তাদের কুমার শিল্পের হাত গুটিয়ে নিয়েছে । প্রতিটি ক্ষেত্রে চলছে এরূপ অবস্থা। আমাদের দেশের কুটির 1 শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে জাপানিদের নীতি গ্রহণ করা উচিত। তাছাড়া কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে তুলতে হলে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলে আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে। বিশ্বদরবারে আবার আমরা সগর্বে দাঁড়াতে পারবো।
See also  অভিধান অনুচ্ছেদ রচনা (৬, ৭, ৮, ৯, ১০ শ্রেণি)

Leave a Reply