প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকে আমরা জানবো “নিরক্ষতা দূরীকরণ” অনুচ্ছেদ রচনাটি কিভাবে লিখতে হয়। যা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর জন্য ।
নিরক্ষতা দূরীকরণ অনুচ্ছেদঃ
যারা নিরক্ষর, তারা চোখ থাকতেও অন্ধ। অক্ষরজ্ঞানহীনতাই হলো নিরক্ষরতা। নিরক্ষরতা বর্তমানে বাংলাদেশের একটি জাতীয় সমস্যা। এটা মানবজীবনের একটি অভিশাপও বটে। বস্তুত একজন অন্ধ ও নিরক্ষর ব্যক্তির মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। সমাজের এসব ব্যক্তি সারা জীবন পরনির্ভরশীল থাকে প্রতিটি কাজকর্মে এরা যেমন বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে, তেমনি পদে পদে বাধার সম্মুখীন হয় তাই আমাদের দেশের নিরক্ষরতা দূরীকরণ আজ বড়ই প্রয়োজন। বিদ্যালয়ে পড়তে না আসা এবং বিদ্যালয় পরিত্যাগের যেসব কারণ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- (১) পরিবারের প্রতিকূল পরিবেশ (২) পিতামাতার দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক চাপ এবং (৩) সামাজিক বিধিনিষেধ ও (৪) পিতামাতার অসচেতনতা। এই কারণগুলোকে বিস্তারিত করে বললে বলা যায়- (১) যেসব পরিবারের বয়স্ক ব্যক্তিরা নিরক্ষর সেসব পরিবারের শিশুদের শিক্ষার ব্যাপারে অভিভাবকরা তেমন কোনো উৎসাহ প্রদর্শন করেন না । (২) পিতামাতার অত্যধিক দারিদ্র্যের কারণেও অনেক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। আবার অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের ওপর অর্থনৈতিক চাপ অর্থাৎ বিদ্যালয়ে গমনের পরিবর্তে ঘরে বা খেতে-খামারে উৎপাদনমূলক কাজে শিশুদের নিয়োজিত রাখার কারণেও অনেক শিশু বিদ্যালয় গমনের সুযোগ পায় না। (৩) সামাজিক বিধিনিষেধ, প্রধানত মেয়েদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যেমন গ্রামাঞ্চলে মেয়েরা একটু বড় হয়ে উঠলেই তাদের বিদ্যালয়ে গমন বন্ধ করে দেওয়া হয় তাছাড়া লেখাপড়ার গুরুত্ব সম্পর্কেও নিরক্ষর পিতামাতা সচেতন নন ।
আরো পড়ুনঃ সকল অনুচ্ছেদ রচনার লিংক।
নিরক্ষরতা মোকাবেলার জন্য প্রথমত, নিরক্ষর পিতামাতাকে শিক্ষার মূল্য সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বয়স্ক-শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে নিরক্ষর লোকদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের ও বিশেষ বিদ্যালয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তৃতীয়ত, যে সব ক্ষেত্রে প্রয়োজন সে সব ক্ষেত্রে লেখাপড়ার সাথে সাথে কিছু কিছু রোজগারের ব্যবস্থাও করে দিতে হবে, যাতে তা দরিদ্র পিতামাতার মনে আগ্রহ ও উৎসাহ সঞ্চার করতে পারে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে দিনে উৎপাদনমূলক কাজে নিয়োজিত ছেলেমেয়েদের জন্য নৈশ স্কুলের ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কে প্রতিকূল সামাজিক বাধা অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এমন ব্যবস্থা ছাড়াও আরেকটি ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে স্থানীয় অবস্থার উপযোগী করে বিদ্যালয়ের সময় নির্ধারণ ও বিদ্যালয় বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করা যায়। এর ফলে বিদ্যালয় গমনের ব্যাপারে সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। আর নিরক্ষরতা দূরীকরণ সম্ভব হবে।