প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকে আমরা জানবো “একুশে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” অনুচ্ছেদ রচনাটি কিভাবে লিখতে হয় । যা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য হবে ।
একুশে ফেব্রুয়ারি অনুচ্ছেদঃ
এক অত্যাচারী পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতা শেষে শুরু হয় আরেক নরপশুদের অত্যাচারের শাসন। পাকিস্তান রাষ্ট্রের দুটি অংশ ছিলো। একটি পূর্ব ও অপরটি পশ্চিম পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তানিদের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী প্রথমেই চক্রান্ত শুরু করে বাঙালির প্রাণপ্রিয় মাতৃভাষা বাংলাকে নিয়ে। ২১ মার্চ, ১৯৪৮ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকেই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা করে। এর তিন দিন পর ২৪ মার্চ কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও সে একই কথার পুনরুল্লেখ করে। বাঙালিরা তাঁর এ ঘোষণাকে মেনে নিতে পারেনি। তারা আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করে । ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঢাকায় এক জনসভায় উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে এরপর মাতৃভাষা রক্ষার দাবিতে পূর্বপাকিস্তানের জনগণের আন্দোলন সংগ্রাম আরও বেগবান হয় ।
আরো পড়ুনঃ সকল অনুচ্ছেদ রচনার লিংক।
২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষার দাবিতে সেদিন যাঁরা আন্দোলন করছিলেন পাকিস্তানি পুলিশ তাঁদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় সেদিন জীবন দিয়েছিলেন শফিউর, সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এবং নাম না জানা আরও অনেকেই। তদানীন্তন শাসকগোষ্ঠী বাংলাকে পূর্বপাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতিদানে বাধ্য হয়। ভাষার দাবিতে শহিদদের স্মরণে ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নির্মিত হয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। এরপর থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। দিনব্যাপী চলে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বর্তমানে ২১ ফেব্রুয়ারি শুধু বাঙালির একার নয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সেই থেকে সারাবিশ্বে এ দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে । যে ভাষার জন্য ‘৫২-তে রক্ত ঝরেছে সে বাংলা ভাষা আজ আমাদের রাষ্ট্রভাষা । সে ভাষাকে আমরা মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসবো।